কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শালিনী দাসের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে তমলুকে রহস্য দানা বেঁধেছে। কলকাতার দমদমের বাসিন্দা এই তরুণী চিকিৎসক গত তিন মাস ধরে কাঁথি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি দু’বছর তমলুক হাসপাতালেও পরিষেবা দিয়েছেন। জানা গেছে, মৃত চিকিৎসক তাঁর মায়ের সঙ্গে তমলুকে ভাড়া থাকতেন। শুক্রবার সকালে নিজের, ভাড়া বাড়িতে ফেরার পরই আকস্মিক এই মৃত্যুর ঘটনা সকলকে স্তম্ভিত করেছে। কিন্তু সকালের ডিউটি সেরে ফেরা এক চিকিৎসকের হাতে চ্যানেলের উপস্থিতি এবং তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু -এই ঘটনাটিকে একটি গভীর রহস্যের মোড়কে ঘিরে ফেলেছে। এই ঘটনায় চিকিৎসক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ জোরকদমে রহস্যের কিনারা করতে তদন্ত চালাচ্ছে। তমলুক থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আফজল আবরার জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে চিকিৎসক অসুস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে। তবে বাড়ি ফেরার পর হাতের চ্যানেলের বিষয়টি সন্দেহের উদ্রেক করছে।
মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘কী কারণে তাঁর হাতে চ্যানেল করা হয়েছিল, তিনি কোনও বহিরাগত চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েছিলেন কিনা, অথবা এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা- সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে।’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার সকাল ৭টায় শালিনীদেবী বাড়ি থেকে বেরোন। চিকিৎসা পরিষেবা দিতে মহিষাদল এবং তমলুকের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে যান। সকালে বেরোনোর সময় তাঁর হাতে কিছু ছিল না। কিন্তু বেলা ১১টা নাগাদ তিনি যখন তমলুকের বাড়িতে ফেরেন, তখন তাঁর মা লক্ষ্য করেন- চিকিৎসক মেয়ের হাতে একটি চ্যানেল লাগানো। বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি বদলে যায়। আচমকা তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর হাতে লাগানো চ্যানেল থেকে শুরু হয় রক্তপাত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে দ্রুত স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে পরে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়, সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
